বিহার ভোট বিশেষ
।। আজ পাসোয়ানের ভোটপরীক্ষা ।।
কাজল ভট্টাচার্য, কলকাতা, ৩ নভেম্বর
অলৌলি বিধানসভা কেন্দ্র। আক্ষরিক অর্থেই পাসোয়ান পরিবারের নিজের কেন্দ্র। মঙ্গলবার সকালে ভোট শুরু হলো সেই কেন্দ্রেও।
খাগারিয়া জেলার এই কেন্দ্রই প্রয়াত রামবিলাস পাসোয়ানকে প্রথমবার বিধানসভায় পাঠিয়েছিল। সালটা ছিল ১৯৬৯। তারপর লাগাতার সাতবার এই বিধানসভা থেকেই নির্বাচিত হন রামবিলাসের ছোট ভাই পশুপতি কুমার পারস। তবে গত দুই বিধানসভা নির্বাচনে ভোটলক্ষী পাসোয়ান পরিবারের বিমুখ হয়েছিলেন।
২০১০ সালের বিধানসভা নির্বাচনে পশুপতির থেকে ওই আসন ছিনিয়ে নিয়েছিলেন জনতা দল ইউনাইটেডের রামচন্দ্র সদা। কিন্তু পরের নির্বাচনে সেই আসন তিনি ধরে রাখতে পারেননি। রামচন্দ্রকে হারিয়ে ওই আসনের দখল নেন রাষ্ট্রীয় জনতা দলের চন্দন কুমার। তবে এবার দল তাঁকে টিকিট দেয়নি। ওদিকে কিছুদিন আগেই জনতা দল ইউনাইটেড রামচন্দ্রকে ছ'বছরের জন্য বহিষ্কৃত করে। এবার লোক জনশক্তির টিকিটে তিনি গতবারের হারের বদলা নিতে মরীয়া। তবে এবার ওই কেন্দ্রে ত্রিমুখী লড়াই। রামচন্দ্রের অন্য দুই প্রতিদ্বন্দ্বীরা হলেন রাষ্ট্রীয় জনতা দলের রামবৃক্ষ সদা, জনতা দল ইউনাইটেডের সাধনা সদার সঙ্গে।
মঙ্গলবারেই ভোটপরীক্ষা পাসোয়ান পরিবারের আরও দুই প্রার্থীর। মৃত্যুঞ্জয় পাসোয়ান মৃণাল, চিরাগ পাসোয়ানের জামাইবাবু এবার বৈশালী জেলার রাজাপাকর কেন্দ্রের প্রার্থী। অন্যদিকে এবারই প্রথমবার নির্বাচনী ময়দানে নামলেন প্রয়াত পাসোয়ানের ভাইপো কৃষ্ণরাজ। তিনি লড়াই চালালেন সমস্তিপুর জেলার রোসড়া কেন্দ্র থেকে। মঙ্গলবার খাগারিয়ার এক ভোটকেন্দ্রে ভোট দিয়ে এলেন খোদ চিরাগ পাসোয়ান।
"একটি আসনেও বিজেপি প্রার্থীর সঙ্গে লড়াই নয়," ঘোষনা করেছিলেন চিরাগ পাসোয়ান। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কথা রাখেননি। কমপক্ষে তিনটি আসনে পদ্ম শিবিরের বিরুদ্ধে প্রার্থী দাঁড় করিয়েছে লোক জনশক্তি পার্টি। ওদিকে সোমবার এক সাংবাদিক বৈঠকে চিরাগ চাঁচাছোলা ভাষায় জানিয়ে দিয়েছেন, বিহারের বিজেপি যা জনতা দল ইউনাইটেডও তা। রাজ্যের বিজেপি নেতারা নীতিশ কুমারের মতোই। তবে তিনি শ্রদ্ধা করেন নরেন্দ্র মোদি আর মোদির আদর্শকে।
ওদিকে নির্বাচনী প্রচার চলার মধ্যেই সোমবার রামবিলাস পাসোয়ানের মৃত্যু নিয়ে সন্দেহপ্রকাশ করে বসে রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জিতন রাম মাঁঝির দল হিন্দুস্তানি আওয়াম মোর্চা। প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখে মোর্চার মুখপাত্র দানিশ রিজওয়ান আবেদন করেন, গোটা ঘটনার তদন্ত হওয়া দরকার। ঘটনায় রেগে গিয়ে চিরাগ বলেন, "মৃত ব্যক্তিকে নিয়ে রাজনীতি করা হচ্ছে।"
এরপরেই জিতন রামকে একহাত নিয়ে চিরাগ বলেন, "বাবার শরীর খারাপের খবর দেওয়ার পরেও, মাঁঝি একবারের জন্যও খোঁজ নেননি।" প্রসঙ্গত মাঁঝির দল হিন্দুস্তানি আওয়ামি মোর্চা তার পুরনো জোটসঙ্গী রাষ্ট্রীয় জনতা দলকে ছেড়ে এবার এনডিএ'র শরিক হয়েছে।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন