* রম্য রচনা *
স্বর্গে - অশান্তি
- পার্থ সারথি সরকার
( সব চরিত্র কাল্পনিক ও মনগড়া )
বেশ কিছুদিন ধরেই স্বর্গে একটা না একটা ঝামেলা লেগেই আছে । 'করোনা ' তো ছিলই তার সঙ্গে যোগ হয়েছে নতুন অশান্তি । অশান্তির সূত্রপাত , কে বা কারা যেন দেবরাজ ইন্দ্রর সমস্ত সোমরস চুরি করে নিয়ে গেছে । এই নিয়ে ইন্দ্র দেবাতা মহেশ্বরের কাছে যান এবং এই কাজ ওনার অনুপ্রেরণায় নন্দি-ভিঙ্গি করেছেন বলে দাবী করেন । মহেশ্বর প্রচন্ড ক্ষুব্ধ হলে সেখানে দেবতা ব্রম্ভা ও বিষ্ণু গিয়ে পৌঁছান । তারা বলেন , দেবরাজ আপনার ধারণার কোন সারবত্তা নেই । আপনি অমূলক মহেশ্বরকে অপমান করেছেন , অবিলম্বে ক্ষমা চান ।
ইন্দ্র কোন রকম ক্ষমা না চেয়েই স্থান ত্যাগ করেন ও স্বর্গের প্রজাদের উপর নির্মম ভাবে অত্যাচার করতে থাকেন । শুধু তাই নয় মহিলাদের সম্মান ও সম্ভ্রম নষ্ট করতেও পিছুপা হন না । দেবতারা একযোগে এর প্রতিবাদ করলে , ইন্দ্র বলেন এগুলো মিথ্যা প্রচার , আরো বলেন আমার বিরুদ্ধ লোকজন স্বর্গের বদনাম করার চেষ্টা করছেন ।
ইন্দ্র যে ভাবে চলছিলেন ওভাবেই চলতে থাকলে , স্বর্গের সবাই বিদ্রোহ ঘোষনা করেন ও ইন্দ্রের সাথে যুদ্ধে অবতীর্ণ হলেন । ইন্দ্র মেঘের আড়াল থেকে যুদ্ধ করলে , স্বর্গের অনেক পুরুষ ও মহিলা মারা গেলেন । দেবতা বিষ্ণু তার সুদর্শন চক্র দিয়ে মেঘ সরিয়ে দিলে , কার্তিক, রাম ও অর্জুনের বানের কাছে পরাস্ত হয়ে ইন্দ্র কোন এক গুপ্ত জায়গায় লুকিয়ে আছেন প্রায় দশদিন হয়ে গেল ।
এদিকে আজ বিষ্ণুর কাছে গিয়ে উপস্থিত হয়েছে তিন বাঙালি - গোপাল , ভানু ও জহর ।
বিষ্ণু : কি সংবাদ ?
গোপাল : আসলে আমার ভাইদের আবদার , আগামীকাল ২৫শে বৈশাখ .... মানে আমরা একটু
বিষ্ণু : ২৫ শে বৈশাখ তো কি ?
ভানু : কবি গুরুর জন্মদিন তো !!
বিষ্ণু : তা , রবি বাবু কি রাজি ?
জহর : আমরা ওনার অনুমতি নিয়েই এসেছি । উনি প্রথমে নিমরাজি থাকলেও আমাদের আবদার ফেলতে পারেননি ।
বিষ্ণু : তা উনি কি থাকবেন ?
গোপাল : না , উনি থাকতে পারবেন না । ওনার বয়স হয়েছে , এছাড়া সুগার ও আছে । তাই বৈদ্য বাইরে বের হতে না বলেছেন ।
বিষ্ণু : কি অনুষ্টান করবে ঠিক করছো ?
তিনজন : সমস্বরে , হ্যাঁ দেব ।
আপনার অনুমতি নিতেই এখানে এসেছি । আমরা সব ঠিক করেই এসেছি । রবীন্দ্রনৃত্যু , গান , আবৃত্তি সব হবে । সবাইকে বলেও এসেছি । অনেক দেবতারা ই অংশগ্ৰহন করবেন বলে দিয়েছেন । নাচে - রম্ভা , মেনকা, ঊব্বশী , গানে প্রধান আকর্ষন দেবী ইন্দ্রানী আরো অনেকে ।
বিষ্ণু : রম্ভারা কি রবীন্দ্র নৃত্য জানে ?
গোপাল : উদয়বাবু তালিম দিচ্ছেন ।
বিষ্ণু: কে উদয়বাবু ?
ভানু : অরে আপনেরে নিয়ে আর পারন যায় না । কাম সারসে।, উদয়শঙ্করের নাম শোনেন নাই ?
বিষ্ণু : হ্যাঁ হ্যাঁ মনে পড়েছে । কিন্তু আমাকে কি করতে হবে ?
ভানু : দু-খান কাম করতে হইবো
আমাগো অনুমতি দেওয়া লাগে আর দেবতা ব্রম্ভাকে যদি বলে দেন একটু সঞ্চালনার জন্য তবে খুবই উপকার হয় ।
বিষ্ণু : এতো লোক থাকে ব্রম্ভাকে সঞ্চালক কেন ?
ভানু : দেহেন , সঞ্চালককে চারিদিক দেখে-শুনে ঘোষনা করতে হয় । উনি ছাড়া তো আর কেউ নাই যিনি ডানদিক , বাঁদিক ও সোজা একলগে দেখতে পাবেন ।
বিষ্ণু : তোমাদের বুদ্ধির তারিফ করি । আমি বলে দিচ্ছি । আর হ্যাঁ প্রোগামটা কোথায় করছো ?
তিনজন: সমস্বরে , আপনি তো অনুষ্টানের সভাপতি । আমরা পারিজাত মাঠের পাশে ঐ 'ইন্দ্রানী' মঞ্চেই করছি ।
বিষ্ণু : সব তো বুঝলাম , এই পরিস্থিতিতে এতো লোক একসঙ্গে কি ঠিক হচ্ছে ।
ভানু : চিন্তা করণের কোন কারণ নাই । ওখানে হাজার জন বইতে পারে , আমরা সাকুল্যে হলাম গিয়া ১০২ জন ।
বিষ্ণু : বাঃ বাঃ তোমাদের দেখে আমার বেশ ভরসা হয় । কিন্তু স্বর্গরাজ্যোর এতো লোক , এমন সুন্দর প্রোগ্ৰাম দেখতে পাবে না !!
জহর : সব ব্যবস্থা আমরা করে এসেছি । ঐ ' ঘন্টায় ঘন্টায় সারদা' র সম্পাদক - শ্রী কেমন চটপট আর ' ঘোঁতঘোঁত ঘন্টা 'র সম্পাদক মৌ-পিয়াল ভটভট এর সাথে কথা হয়েছে ওরা লাইভ টেলিকাস্ট।করবে ।
বিষ্ণু : বাঃ বাঃ তোমাদের যত দেখছি অবাক হচ্ছি । কৃতকার্য ভবঃ
ক্রমশ :
বেশ কিছুদিন ধরেই স্বর্গে একটা না একটা ঝামেলা লেগেই আছে । 'করোনা ' তো ছিলই তার সঙ্গে যোগ হয়েছে নতুন অশান্তি । অশান্তির সূত্রপাত , কে বা কারা যেন দেবরাজ ইন্দ্রর সমস্ত সোমরস চুরি করে নিয়ে গেছে । এই নিয়ে ইন্দ্র দেবাতা মহেশ্বরের কাছে যান এবং এই কাজ ওনার অনুপ্রেরণায় নন্দি-ভিঙ্গি করেছেন বলে দাবী করেন । মহেশ্বর প্রচন্ড ক্ষুব্ধ হলে সেখানে দেবতা ব্রম্ভা ও বিষ্ণু গিয়ে পৌঁছান । তারা বলেন , দেবরাজ আপনার ধারণার কোন সারবত্তা নেই । আপনি অমূলক মহেশ্বরকে অপমান করেছেন , অবিলম্বে ক্ষমা চান ।
ইন্দ্র কোন রকম ক্ষমা না চেয়েই স্থান ত্যাগ করেন ও স্বর্গের প্রজাদের উপর নির্মম ভাবে অত্যাচার করতে থাকেন । শুধু তাই নয় মহিলাদের সম্মান ও সম্ভ্রম নষ্ট করতেও পিছুপা হন না । দেবতারা একযোগে এর প্রতিবাদ করলে , ইন্দ্র বলেন এগুলো মিথ্যা প্রচার , আরো বলেন আমার বিরুদ্ধ লোকজন স্বর্গের বদনাম করার চেষ্টা করছেন ।
ইন্দ্র যে ভাবে চলছিলেন ওভাবেই চলতে থাকলে , স্বর্গের সবাই বিদ্রোহ ঘোষনা করেন ও ইন্দ্রের সাথে যুদ্ধে অবতীর্ণ হলেন । ইন্দ্র মেঘের আড়াল থেকে যুদ্ধ করলে , স্বর্গের অনেক পুরুষ ও মহিলা মারা গেলেন । দেবতা বিষ্ণু তার সুদর্শন চক্র দিয়ে মেঘ সরিয়ে দিলে , কার্তিক, রাম ও অর্জুনের বানের কাছে পরাস্ত হয়ে ইন্দ্র কোন এক গুপ্ত জায়গায় লুকিয়ে আছেন প্রায় দশদিন হয়ে গেল ।
এদিকে আজ বিষ্ণুর কাছে গিয়ে উপস্থিত হয়েছে তিন বাঙালি - গোপাল , ভানু ও জহর ।
বিষ্ণু : কি সংবাদ ?
গোপাল : আসলে আমার ভাইদের আবদার , আগামীকাল ২৫শে বৈশাখ .... মানে আমরা একটু
বিষ্ণু : ২৫ শে বৈশাখ তো কি ?
ভানু : কবি গুরুর জন্মদিন তো !!
বিষ্ণু : তা , রবি বাবু কি রাজি ?
জহর : আমরা ওনার অনুমতি নিয়েই এসেছি । উনি প্রথমে নিমরাজি থাকলেও আমাদের আবদার ফেলতে পারেননি ।
বিষ্ণু : তা উনি কি থাকবেন ?
গোপাল : না , উনি থাকতে পারবেন না । ওনার বয়স হয়েছে , এছাড়া সুগার ও আছে । তাই বৈদ্য বাইরে বের হতে না বলেছেন ।
বিষ্ণু : কি অনুষ্টান করবে ঠিক করছো ?
তিনজন : সমস্বরে , হ্যাঁ দেব ।
আপনার অনুমতি নিতেই এখানে এসেছি । আমরা সব ঠিক করেই এসেছি । রবীন্দ্রনৃত্যু , গান , আবৃত্তি সব হবে । সবাইকে বলেও এসেছি । অনেক দেবতারা ই অংশগ্ৰহন করবেন বলে দিয়েছেন । নাচে - রম্ভা , মেনকা, ঊব্বশী , গানে প্রধান আকর্ষন দেবী ইন্দ্রানী আরো অনেকে ।
বিষ্ণু : রম্ভারা কি রবীন্দ্র নৃত্য জানে ?
গোপাল : উদয়বাবু তালিম দিচ্ছেন ।
বিষ্ণু: কে উদয়বাবু ?
ভানু : অরে আপনেরে নিয়ে আর পারন যায় না । কাম সারসে।, উদয়শঙ্করের নাম শোনেন নাই ?
বিষ্ণু : হ্যাঁ হ্যাঁ মনে পড়েছে । কিন্তু আমাকে কি করতে হবে ?
ভানু : দু-খান কাম করতে হইবো
আমাগো অনুমতি দেওয়া লাগে আর দেবতা ব্রম্ভাকে যদি বলে দেন একটু সঞ্চালনার জন্য তবে খুবই উপকার হয় ।
বিষ্ণু : এতো লোক থাকে ব্রম্ভাকে সঞ্চালক কেন ?
ভানু : দেহেন , সঞ্চালককে চারিদিক দেখে-শুনে ঘোষনা করতে হয় । উনি ছাড়া তো আর কেউ নাই যিনি ডানদিক , বাঁদিক ও সোজা একলগে দেখতে পাবেন ।
বিষ্ণু : তোমাদের বুদ্ধির তারিফ করি । আমি বলে দিচ্ছি । আর হ্যাঁ প্রোগামটা কোথায় করছো ?
তিনজন: সমস্বরে , আপনি তো অনুষ্টানের সভাপতি । আমরা পারিজাত মাঠের পাশে ঐ 'ইন্দ্রানী' মঞ্চেই করছি ।
বিষ্ণু : সব তো বুঝলাম , এই পরিস্থিতিতে এতো লোক একসঙ্গে কি ঠিক হচ্ছে ।
ভানু : চিন্তা করণের কোন কারণ নাই । ওখানে হাজার জন বইতে পারে , আমরা সাকুল্যে হলাম গিয়া ১০২ জন ।
বিষ্ণু : বাঃ বাঃ তোমাদের দেখে আমার বেশ ভরসা হয় । কিন্তু স্বর্গরাজ্যোর এতো লোক , এমন সুন্দর প্রোগ্ৰাম দেখতে পাবে না !!
জহর : সব ব্যবস্থা আমরা করে এসেছি । ঐ ' ঘন্টায় ঘন্টায় সারদা' র সম্পাদক - শ্রী কেমন চটপট আর ' ঘোঁতঘোঁত ঘন্টা 'র সম্পাদক মৌ-পিয়াল ভটভট এর সাথে কথা হয়েছে ওরা লাইভ টেলিকাস্ট।করবে ।
বিষ্ণু : বাঃ বাঃ তোমাদের যত দেখছি অবাক হচ্ছি । কৃতকার্য ভবঃ
ক্রমশ :
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন