ঐতিহাসিক বাম-কংগ্রেসের সংযুক্ত ফ্রন্টের ব্রিগেডে রাজনৈতিক ফুরফুরে বাতাস নিল সমর্থকরা

 


ভোটের মুখে কি বার্তা দিল সংযুক্ত ফ্রন্টের ব্রিগেড ?



বিশেষ প্রতিনিধি , কলকাতা , ২৮ ফেব্রুয়ারিঃ আসন সমঝোতার জট কাটেনি এখনও , তবুও একটা চমক দিল ২০২১ এর সংযুক্ত ফ্রন্টের ২৮ শে ফেব্রুয়ারির ব্রিগেড। কি সেই চমক ? জন জোয়ারের বন্যায় ভেসে যাওয়া একটা ব্রিগেডিয় জনসভা। এই জনসভা গত দেড় দশকেও দেখা যায়নি । মেনে নিয়েছে রাজনৈতিক মহল। আজ দুটি জিনিষ প্রমাণ করার ছিল , ১) রাজ্যের শাসক দল ,তৃণমূল কংগ্রেস ও প্রধান বিরোধী তথা কেন্দ্রের শাসক দল বিজেপি'কে ছাপিয়ে কতটা নিজেদেরকে প্রমান করতে পারবে বাম ও কংগ্রেস ( সঙ্গে আব্বাস সিদ্দিকির , ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্ট ) , ২) গত একমাসে বাম ও কংগ্রেসের মাটি ফিরে পাওয়ার লড়াই তে কতটা কর্মী ও সমর্থকদের মধ্যে , বিশেষ করে নতুন প্রজন্মের কাছে গ্রহণ যোগ্যতার নিরিখে পৌছাতে পেরেছে দুটি দল ? দুটিকে যদি নম্বর দেবার বিষয়টি থাকে , তাহলে বলা যেতেই পারে , রাজনৈতিক দিক থেকে একেবারে একশোতে একশো। আর সেখান থেকেই নতুন ভাবে অক্সিজেন নিয়ে বাম ও কংগ্রেস আবার তাঁদের পুরোনো মাটি ফেরত পাবার লড়াইতে আগামী নির্বাচনী লড়াইতে ঝাপিয়ে পরতে পারবেন।

কিন্তু অন্য ভাবে যদি দেখা যায় , তাহলে রাজনৈতিক  মহলের কাছে এই বিশাল জমায়েত কিন্তু সন্তোষজনক নয় বলেই ধারনা। তাঁর কারণ হিসেবে তাঁরা বলেছেন , এই জমায়েত পারত পক্ষে বাম - কংগ্রেস-আই এস এফ এর মিলিত জমায়েত। সেই জমায়েতের ফ্ল্যাগের দিকে লক্ষ্য দিলেই দেখা যাবে , বাম আর   আই এস এফ  এর পতাকার মাঝেই হারিয়ে গেছে কংগ্রেস। গ্রাম গ্রামাঞ্চল থেকে হয়ত মানুষ এসেছেন , তাঁরা কিন্তু যে আন্তরিকতার জায়গা থেকে , দল কে ভালোবেসে আসা , সেই মন টাকে খুজে পাওয়া যায়নি। অন্য দিকে আই এস এফ , এই ব্রিগেড থেকে যা পেতে চেয়েছিল , তার থেকে কয়েক হাজার গুন বেশি তাঁদের ঝুলিতে ভরে নিয়ে গেল । কেননা তাঁদের কাছে হারাবার কিছুই ছিল না। তাঁরা এই প্রথম সেই ভাবে নির্বাচনী ময়দানে। এই বিশাল জমায়েতে আসা তাঁদের সমর্থকদের উল্লাসে সেই কথাই প্রমাণ করে দিয়েছে বারে বারে। আর কংগ্রেসের কাছে এতটাই একটা অপ্রত্যাশিত ধাক্কা যে ঘরের বাইরে এসে লাগবে , সেটাও কাঙ্ক্ষিত ছিল না প্রধান জোট সঙ্গীর কাছে। বামেরা তাঁদের সদ্য জোট সঙ্গীকে সাদরে আহ্বান করে যে কংগ্রেসকে এভাবে হেনস্থার মুখোমুখি বসিয়ে দেবে , সেয়াও হয়ত বাস্তবে ভাবতে পারেনি। তবে আগামী দুদিন কিন্তু সংযুক্ত এই ফ্রন্টের কাছে কালো দিন হয়ে উঠতে পারে বলে মনে করছে রাজনইটিক মহল। তাঁর কারণ আব্বাসে দলকে বামেরা ত্রিশটি আসন ছাড়লেও , কংগ্রেস এখনো সেই ধরণের সঝোতায় আসেনি। আজ আব্বাস-অধীর সম্পর্কের ছবিটা কিন্তু খুব একটা ভালো দেখাল না ব্রিগেড। 

বেশ কয়েকটা নির্বাচনে , এই ধরণের ফ্রন্টের ছবি দেখতে অভ্যস্থ হয়েছে ভোটার রা। তাঁরা আজ সাগ্রহে রবিবারের দুপুরে লক্ষ্য রাখছিলেন ব্রিগেডে। তাঁরা যে কথা শুনতে চাইছিলেন রাজ্যের প্রাক্তন শাসক দলের কাছ থেকে, সেদিক থেকে তাঁরা অনেকটাই খুশি। কেননা , বামেরা কর্ম সংস্থান থেকে বন্ধ চা বাগানের মানুসের কথা যেমন বলেছেন, তেমনি কংগ্রেসের কথাতেও স্বচ্ছ শাসন ব্যবস্থার কথা উঠে এসেছে।  অন্য দিকে শিল্পায়নের কথাও এসেছে প্রসঙ্গক্রমে। ফলে প্রতিদিনকার রাজনৈতিক খেউড় মার্কা একটা বক্তব্য থেকে রিলিফ পেয়েছেন তাঁরা। 

সব মিলিয়ে আজকের ব্রিগেড সংযুক্ত ফ্রন্টের হয়ে যে বার্তা দিল, সেটা নিছক অস্তিত্ব রক্ষার লক্ষ্যে নামা দুটি দলের নিজেদেরকে প্রমাণ করার দৌড়ে একেবারেই সফল । এটা বলা যেতেই পারে ।

মন্তব্যসমূহ