গড়িয়ার মহামায়া তলায় চলছে এক ঝাঁক নবীন প্রতিভার ক্যানভাসে চিন্তনের প্রতিফলন নিয়ে ফ্রিউইংসের চিত্র প্রদর্শনী

 ক্যানভাস 

কেউ ডালির ভক্ত তো কেউ জগন্নাথের 

আবীরা ব্যানার্জির সৃষ্টি


   -  কাজল ভট্টাচার্য, কলকাতা

তিনি মানুষের মুখ দেখে বেড়ান। হাটেবাজারে পথেঘাটে। সর্বত্র। আচমকাই কোনও মুখ মনে ধরে যায়। মন থেকে সেই মুখ নেমে আসে ক্যানভাসে। ছবির দুনিয়ায় বিচরণ আবীরার। ভালবাসেন ভ্যানগগের গাছপালা অরণ্য প্রকৃতিতে ঘুরে বেড়াতে। আর তাই দুর্বলতা 'বটল গ্রিন' রংয়ের ওপরে। আবার কখনও হারিয়ে যান সালভাডর ডালির পরাবাস্তবের দুনিয়ায়। সেই ঘোর কাটতেই এঁকে ফেলেন ডালির সেই মজাদার প্রতিকৃতি। নিছক কেতাবি পোর্ট্রেট না, আক্ষরিক অর্থেই ছবি। আর সেখানেই শিল্পীর মুনশিয়ানা। তাসের দেশের ছবিতে 'বাদশাহ' সালভাডর ডালি।
'এরপরেই ভ্যানগগ নিয়ে কাজ করবো,' বলেন শিল্পী আবীরা ব্যানার্জি। বেশ কিছুদিন ধরেই মনের ভেতর সমানে গোত্তা মেরে চলেছে ভ্যানগগ। 
মুখগুলো ভাসে মনের মণিকোঠায়। আর মনোযোগ হেঁসেলে। হাতাখুন্তি হাতে জমিয়ে সংসার করেন। আর সময় পেলেই হাতে তুলে নেন রংতুলি। বলতে গেলে, এও একরকমের লড়াই। জীবন সংগ্রাম। তলেতলে এই লড়াই যিনি উসকে দেন তিনি ভারতের এক দিকপাল শিল্পী। 'মকবুল ফিদা হুসেনের জীবন আমাকে প্রেরণা জোগায়,' বলেন আবীরা। এমন সব শিল্পপ্রেমিকদের জন্যই কালে কালে স্ফীত হয়েছে বিশ্বশিল্পের দুনিয়া।
 সৈকত ঘোষ এর সৃষ্টি 

শখের যে কতরকম বৈচিত্র তা বোঝা যায় ফ্রিউইংসের প্রদর্শনী দেখলে। সেই সঙ্গে স্পষ্ট হয়, শিল্পীমনের ব্যাপকতা। ছবিবাজারে ভীষণরকম চাহিদা গণপতি দেবের। ভাস্কর্যেও তাই। কিন্তু শিল্পী সৈকত ঘোষের পছন্দ জগন্নাথ।
দেবদেবীর ছবি আঁকার ওপর ভীষণ দুর্বলতা সৈকতের। ছোটবেলা থেকেই আপন খেয়ালে এঁকে চলেছেন। তবে তা কোনও ধরাবাঁধা ছকে এগোয়নি। গাছপালা, মাঠ, নদী, পুকুর যা দেখতেন তাই এঁকে খাতা ভরাতেন। জলরংয়ের নেশা পেয়ে বসেছিল তাঁকে। তবে দিন পেরোতে না পেরোতেই জরুরি হয়ে উঠলো জীবন জীবিকার সন্ধান।
এরপর গুরুর কাছে নাড়া বেঁধে সিরিয়াসলি আঁকা শেখা শুরু বছর চারেক আগে। দেবদেবী, প্রকৃতি তো ছিলোই, তাতে যোগ হলো পোর্ট্রেট। প্রদর্শনীতে অনেকের চোখ পড়ছে সৈকত ঘোষের জগন্নাথ ছবির দিকে। সেই বিশেষ আঙ্গিকে সারল্যে ভরা প্রভুর মুখ। 
- ইচ্ছে আছে, জগন্নাথদেবকে নিয়ে একটা সিরিজ আঁকার, বলেন শিল্পী।



মন্তব্যসমূহ