বেহালার দিন প্রতিদিন এর চা'এর ঠেক বিশেষ - আজ শিলিগুড়ির নেতাজী কেবিন

পাড়ার কফি হাউস 

ট্রেন থামিয়ে এনজেপী ষ্টেশন থেকে শিলিগুড়ির নেতাজী কেবিনের চা খেতে আসতেন ট্রেনের ড্রাইভার এবং গার্ডেরা



 -  কুশল দাশগুপ্ত  

( আমাদের পাড়ায় পাড়ায় আছে আমাদের যৌবনের মন খুলে কথা বলার জায়গা , চায়ের ঠেক । তাকে ঘিরে আছে নানা নস্ট্যালজিয়া । সেই ঠেকের গল্প শুরু হল আজ থেকে । প্রতি রবিবার থাকবে এরকমই এক একটি পাড়ার চায়ের দোকান। যা কিনা পাড়ার কফি হাউস

 অনেকে বলেন , বুদ্ধি খোলে নাকি চায়ের আড্ডায়। আর মত বিনিময় হয় নাকি চায়ের দোকানে। তবে কলকাতার কফি হাউসের বা পাড়ায় পাড়ায় এক একটি চায়ের দোকানের আড্ডা যেন হয়ে যায় কিংবদন্তী । এক একটি সময় যায় , আর পরম্পরায় বাবা থেকে ছেলে , আবার দাদু থেকে নাতি , এই সব দোকানের টেবিলে এসে চায়ের চুমুকে শেয়ার করে নিজের মনের কথা। তর্কে আর বিতর্কে জমজমাট হয়ে ওঠে সারাটা দিন। সকালের আড্ডা একরকম আবার সন্ধ্যের আড্ডা আরেক রকম। দুপুরের আড্ডা পাল্টে যায় হয়ত বিষয়ে। বছরের পর বছর ধরে চলে রাজনীতি থেকে সমাজনীতি , অর্থনীতি থেকে বাস্তুনীতি , সব বিষয়ে। মানুষ পাল্টে গেলেও থেকে যায় চেনা দোকানের চায়ের ঠেক।  

শিলিগুড়ির বিধান মার্কেটের এই নেতাজী কেবিন ঘিরে আছে অনেক গলপ। কথিত আছে ট্রেন থামিয়ে এনজেপী ষ্টেশন থেকে এখানে চা খেতে আসতেন ট্রেনের ড্রাইভার এবং গার্ডেরাও। বংশ পরম্পরায় উত্তরবঙ্গে বেড়াতে এলে তাঁদের পরবর্তী প্রজন্মও আসে এই দোকানে। 

আরো গল্প আছে , যেমন চাকরি পেয়ে বাইরে গেলেও , দেশে ফিরে একবারের জন্য হলেও এই দোকানে এসে চায়ের কাপে চুমুক দেয়। সঙ্গের প্রজন্মকেও শোনায় আগের কথা।

শিলিগুড়ি শহরের গৌরব নেতাজী কেবিন।আজ থেকে বহু বছর আগে তৈরী হওয়া এই দোকানের গৌরব আজ ও  অপরিহার্য।কে না এসেছেন এখানে খেলোয়াড় থেকে অভিনেতা রাজনীতিবিদ থেকে কবি সাহিতিক থেকে ব্যাবসায়ী সকলেই।চায়ের আমেজ যেন এই শীতে আরো বেশী করে ছড়িয়েছে নেতাজী কেবীনে। আর শিলিগুড়ির কফি হাউস হয়ে উঠেছে নেতাজী কেবিন। 

এই শীতে কি দিন কি দুপুর কি রাত সবসময় ভীড়ে ঠাসা থাকে এই টি ষ্টলটি মানে চায়ের দোকানটি। ।মালিক প্রনব বাগচী জানালেন , সারা দিনে এখন তিন থেকে পাঁচ হাজার লোক আসেন এই কেবিনে।তাদের পরিসেবা দেবার জন্য সারাদিন পরিশ্রম করে চলেছেন শ্যামল এবং দীনবন্ধুরা। সারাদিন ধরে চলতে থাকে টোষ্ট ওমলেট এবং চায়ের বিপ্লব ।এখানকার রেগুলার মানুষ যারা এখানে ছাড়া অন্য এলাকায় চা খেতে চান না তাদের সংখ্যা প্রায় দেড় হাজারেরও বেশী। এরা এখানে ছাড়া অন্য কোথাও চা খান না এমনকি বাড়িতেও না। 

  এখন প্রচুর আধুনিক চায়ের  দোকান তৈরী হয়েছে কিন্তুু নেতাজী কেবিনের গৌরব কেউ মুছে দিতে পারেন নি।  সকাল থেকে দুপুর বিকেল থেকে রাত চায়ের ধোয়া দেখতে পাওয়া যাবে নেতাজী কেবিন থেকে।সাথে পাওয়া যাবে প্রচুর চা পিপাশু লোকেদের যারা নেতাজী কেবীনের চা ছাড়া অন্য কোথাও চায়ের কথা ভাবতেই চান না। সময়ের শক্তিতে আগামীতেও চলবে এই চায়ের দোকানের গরিমা এটাই চান শিলিগুড়ির অগনিত চা পিপাশু মানুষ।

মন্তব্যসমূহ