কলকাতা পুলিশের মানবিক মুখ , গ্রীন কড়িডোর করে পরিক্ষার্থীকে পৌছে দিল পরীক্ষা কেন্দ্রে

 

কলকাতা পুলিশের মানবিক প্রচেষ্টা , গ্রীণ কড়িডোর করে অসুস্থ পরীক্ষার্থীকে পৌছে দিল পরীক্ষা কেন্দ্রে 



বিশেষ সংবাদদাতা , কলকাতা , ২৭ ফেব্রুয়ারিঃ   এবছর সিবিএসই-র  দশম শ্রেণীর পরীক্ষার্থী সাউথ পয়েন্ট হাই স্কুলের ছাত্র ও কসবা এলাকার বাসিন্দা সৌম্যাশীষ দত্ত। আজ থেকে শুরু হয়েছে পরীক্ষা, কিন্তু আজ সকাল পর্যন্ত তার অভিভাবকরা জানতেন না যে সৌম্যাশীষ পরীক্ষায় বসতে পারবে  কারণ  গত ২২ ফেব্রুয়ারি থেকে লিভারের সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি সৌম্যাশীষ। তা হলে কী হবে, পরীক্ষা দেওয়ার দৃঢ়সঙ্কল্প তার। হাসপাতালের বেডে শুয়ে শুয়েই তাই বাবার কাছে আর্জি, যে করে হোক পরীক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থা করে দাও। বাবা স্নেহাশীষ দত্ত উপায়ান্তর না দেখে যোগাযোগ করেন কসবা ট্রাফিক গার্ডের ওসি ইনস্পেকটর অমরেশ ঘোষের সঙ্গে। বাবার আর্জি , কোনোভাবে কি ছেলেকে বাইপাসের ধারে হাসপাতাল থেকে বালিগঞ্জে তার ইস্কুলে পৌঁছে দেওয়া যায়? বাবার আকুতিতে  এক কথায় রাজী হয়ে যান অমরেশ। তৎক্ষণাৎ যোগযোগ করেন ট্রাফিক কন্ট্রোল রুম এবং পার্শবর্তী  সাউথ ইস্ট ট্রাফিক গার্ডের ওসি ইনস্পেকটর আশীষ রায়ের সঙ্গে। এই দুই গার্ডের ওপর দায়িত্ব পড়ে, পাইলট সমেত ‘গ্রিন করিডর’ করে  সৌম্যাশীষকে স্কুলে  পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করার। রাসবিহারী কানেক্টরে গ্রিন করিডর’ করে মাত্র  ১০ মিনিটের মধ্যে সৌম্যাশীষকে তার পরীক্ষাকেন্দ্রে  পৌঁছে দিতে  পরপর পাইলট হিসেবে পথ দেখান  কসবা ট্রাফিক গার্ডের সার্জেন্ট সুজয় কুমার সাহা ও সাউথ ইস্ট ট্রাফিক গার্ডের সার্জেন্ট দেবজ্যোতি বিশ্বাস।  সৌম্যাশীষ দত্ত অবশেষে পরীক্ষা দেয় । 

একই রকম পুলিশের মানবিক মুখ দেখেছিল কলকাতা ।  গত শনিবার  ১১.২০ নাগাদ স্ট্র্যান্ড রোডে রাজা কাটরার কাছে টহল দিচ্ছিলেন হাওড়া ব্রিজ ট্রাফিক গার্ডের ওসি ইনস্পেকটর শৌভিক চক্রবর্তী। নজরে পড়ে, ক্রন্দনরতা স্কুল ইউনিফর্ম পরা এক কিশোরী, সাহায্য চাইছে এর তার কাছে। তাকে জিজ্ঞেস করে শৌভিক জানতে পারেন, এবছর মাধ্যমিক পরীক্ষা দিচ্ছে মেয়েটি, পরীক্ষার সিট পড়েছে শ্যামবাজারের আদর্শ শিক্ষা নিকেতনে। নেতাজি সুভাষ রোডের বাসিন্দা সে, একাই পরীক্ষা দিতে যাচ্ছে যেহেতু পরিবারের সকলে তার দাদুর শেষকৃত্য সারতে গেছেন। কিন্তু বড় দেরি হয়ে গিয়েছে বেরোতে, সময়মত পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছনো অসম্ভব, তাই কাঁদতে কাঁদতে এদিক ওদিক ছুটোছুটি করছে সাহায্যের আশায়।  ব্যাপার বুঝে আর এক মিনিটও ব্যয় না করে মেয়েটিকে তাঁর গাড়িতে তুলে নেন শৌভিক, ট্রাফিক কন্ট্রোল রুমে খবর দিয়ে তৈরি করিয়ে নেন ‘গ্রিন করিডর’। রাস্তায় কোথাও না থেমে ঝড়ের গতিতে গাড়ি পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছে যায় কাঁটায় কাঁটায় সাড়ে এগারোটায়, যখন সবে দরজা খুলছে স্কুলের। অভিভূত, কৃতজ্ঞ কিশোরীকে ‘বেস্ট অফ লাক’ জানিয়ে বেরিয়ে পড়েন শৌভিক। 

মন্তব্যসমূহ